রাজনীতি
24 Bangladesh
১৫ জুলাই, ২০২৫ | 8:04 AM
জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের চামড়া তোলার চেষ্টা না করে নিজ দলের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল। তিনি বলেন, নয়তো আওয়ামী লীগের মতো আপনাদের ওপরও অভিশাপ নেমে আসবে।
সোমবার (১৪) জুলাই রাতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে শ্রমিক অঙ্গনে আহত পঙ্গুত্ববরণকারী জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি সোহেল রানা মিঠুর পরিচালনায় মহানগর হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাওয়ার পরও সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, খুন, ধর্ষণ বন্ধ হয়নি। এসব অপকর্ম কারা করছে জাতি জানে।
সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে শিষ্টাচার বজায় রেখে রাজনীতি করতে তিনি সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান।
শ্রমিক অঙ্গনে আহত পুঙ্গত্ববরণকারীদের উদ্দেশ্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শ্রমিক জনগোষ্ঠী যখন নতুন বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে আসবে তখনই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সহজ হবে। এর প্রমাণ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তাদের অবদান। শহীদ ও আহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শহীদ ও আহত হয়েছে শ্রমিক জনগোষ্ঠী।
জামায়াত সব শহীদ পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে উপহার দিয়েছে এবং প্রত্যেক আহতদের চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। এছাড়া জামায়াতে ইসলামী শহীদদের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য ১০ খণ্ডে ১৫শ পৃষ্ঠার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছে। ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির জন্য যারা জীবন দিয়েছে তাদের ইতিহাস কেউ ভুলতে পারবে না, মুছতে পারবে না। আগামীতে আহতদের নিয়েও বই প্রকাশ করা হবে বলে তিনি জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতা কখনো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। বরং দেশের প্রয়োজনে, জাতির স্বার্থে বিদেশ থেকে দেশে এসেছেন। মৃত্যুর ভয়কে পরওয়া করেনি। ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছে তবুও কারো সঙ্গে আপস করে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি। আগে আওয়ামী লীগ মনে করেছিল এই দেশ তাদের বাপ-দাদার। তারা কথায় কথায় মানুষকে দেশ ছাড়তে হুমকি দিতো, এখন তারাই বাংলা ছেড়ে তাদের আপন ঠিকানা ইন্ডিয়ায় চলে গেছে।
আওয়ামী লীগ চলে যাওয়ার পর এখন আরেকদল আওয়ামী লীগের মতোই বাংলাদেশকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করছে। এরা এখন বাংলা ছাড়তে মিছিল করছে। যারা দেশ ছাড়তে ভয় দেখায়, তারাই দেশ ছাড়া! বিদেশে বসে হুঙ্কার ঝাড়ে।
তিনি আরও বলেন, কেউ যদি আওয়ামী লীগের বস্তা পঁচা রাজনীতি নতুন করে চর্চা করতে থাকে তাদেরও আওয়ামী লীগের পরিণতি বরণ করতে হবে। সজীব ওয়াজেদ জয় আড়াই লাখ কর্মী বেতন দিয়ে নিয়োগ করে জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে দমাতে পারেনি। এখন আবার কেউ কেউ সাইবার ফোর্সে লাখ-লাখ কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে শুধু জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে। কোনো অপপ্রচারেই লাভ হবে না। জনগণ বুঝে এবং জানে কারা দেশপ্রেমিক এবং জনগণের পক্ষে আর কারা জনগণের বিপক্ষে। এর জবাব জনগণ যথাসময়ে দেবে।
তিনি উপস্থিত জুলাই যোদ্ধাদের আগামী ১৯ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দিয়ে ৭ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে অধিকার আদায় করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম, মহানগর সহসাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, মাহবুবুর রহমান, ওমর ফারুক, জুবায়ের আল মাহমুদ, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চঞ্চল, মহানগর কার্যনির্বাহী সদস্য ড. আজগর আলী, জয়নাল আবেদীন, মিজানুর রহমান, মো. ইউসুফ আলী, আব্দুর রহমান, আব্বাস উদ্দিন, শহীদ রফিকুল ইসলামের ভাই, আহত লাইলী আক্তার লিজা, আহত আল-আমিন, আহত সোহাগ প্রমুখ।