Logo
শুক্রবার, ১৭ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / August 1, 2025
শুক্রবার, ১৭ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / August 1, 2025
আজকের শিরোনাম:

লাইফস্টাইল

অতিরিক্ত চাপ দিলে কি অফিস লাভবান হয়

Picture of the author

24 Bangladesh

৩১ জুলাই, ২০২৫ | 5:44 AM

Picture of the author

আজকের প্রতিযোগিতামূলক কর্মসংস্থানের বাজারে প্রতিষ্ঠানের মালিক বা ম্যানেজাররা কর্মীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ফলাফল আশা করেন। সময়মতো অফিসে আসা, নির্ধারিত লক্ষ্য পূরণ, এবং নিয়ম মেনে কাজ করা—এসবই একজন আদর্শ কর্মীর বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এই “আদর্শ” ধারণার আড়ালে অনেক সময় লুকিয়ে থাকে এক ধরনের অসহনীয় চাপ, যা কর্মজীবনকে করে তোলে বিষাক্ত।


অতিরিক্ত চাপের কারণে কর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় অবসাদ ও ভুলভ্রান্তি


অফিসে দীর্ঘসময় অতিরিক্ত চাপে থাকতে হলে কর্মীদের মধ্যে দেখা দিতে পারে অবসাদ, ঘুমের সমস্যা, মেজাজের অবনতি এবং মানসিক ক্লান্তি। এইসব সমস্যার কারণে পরদিন কাজে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। হঠাৎ করে ছোটখাটো ভুল, সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারা, কিংবা সহকর্মীদের সঙ্গে মনোমালিন্য—এসবই তখন ঘন ঘন ঘটতে শুরু করে।


 কাজের চাপ যখন পেরিয়ে যায় অফিসের গণ্ডি



একজন কর্মী অফিসের বাইরেও যদি কাজের চাপ বয়ে বেড়ান, তা হলে তার ব্যক্তিজীবন ও সামাজিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ভারসাম্যহীনতা ধীরে ধীরে কাজের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দেয়। এমনকি সৃজনশীলতাও হারিয়ে যায়।


চাপ বেশি মানেই কাজ বেশি? গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাজ করেন, তাদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩৫% এবং হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ১৭% বেশি।


মানবদেহ কোনো যন্ত্র নয়

একটানা দীর্ঘ সময় কাজ করলে শরীর ও মস্তিষ্ক—দুটোই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জানাচ্ছে, একটানা ৯০ মিনিট কাজ করলে কাজের মান কমে যায় এবং ভুলের হার বেড়ে যায়।


অতিরিক্ত চাপের কারণে আর্থিক ক্ষতিও কম নয়


মার্কিন গবেষণায় উঠে এসেছে একজন অবসন্ন কর্মীর কারণে কোম্পানিকে বছরে গড়ে ৪ হাজার থেকে ২১ হাজার ডলার পর্যন্ত ক্ষতি হয়, ১ হাজার কর্মীর জন্য বছরে লোকসান: ৫.৩ মিলিয়ন ডলার। অতিরিক্ত চাপে থাকা কর্মীদের মধ্যে ভুল করার হার: ১১ গুণ বেশি। অসুস্থতাজনিত ছুটির হার: ৮ গুণ বেশি। অফিসে থেকেও অকার্যকর হওয়ার হার: ৪ গুণ বেশি।


সুস্থ কর্মী, সফল অফিস: করণীয় কি?



প্রতিষ্ঠানের উচিত এমন একটি কর্মপরিবেশ গড়ে তোলা, যেখানে কর্মীরা চাপমুক্তভাবে কাজ করতে পারেন। কাজের পর কর্মীদের যেন সময় থাকে পরিবার, বন্ধু ও নিজের যত্ন নেওয়াসহজ কিছু উদ্যোগ:


  • নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষের লক্ষ্য
  • অতিরিক্ত ওভারটাইম না করিয়ে কাজের বণ্টন সুষম করা
  • মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া
  • কর্মীদের সৃজনশীলতাকে মূল্যায়ন করা


চাপ নয়, যত্নই প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেয়

অতিরিক্ত কাজ বা চাপ যতটা না লাভ দেয়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি ডেকে আনে। সুস্থ, সুখী, এবং উৎসাহী কর্মীরাই প্রতিষ্ঠানকে সফলতার পথে নিয়ে যেতে পারেন। সুতরাং, কর্মীদের শ্বাস নেওয়ার সুযোগ দিন, চাপ নয়—দিন সহানুভূতি ও সহায়তা।


সূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ, নিউজ–মেডিকেল ডটনেট, হেলথলাইন





    জনপ্রিয়

    সর্বশেষ