ধর্ম
24 Bangladesh
২৩ জুন, ২০২৫ | 7:54 AM
জীবনে মানুষ নানাভাবে, নানাপন্থায় নানা রকমের পাপে জড়িয়ে পড়ে। পাপ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহতায়ালার কাছে তওবা করতে হয়। আর তওবার অন্যতম একটি দিক হলো- পাপ স্বীকার করা, অনুতপ্ত হওয়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। পাপের স্বীকারোক্তি ও অনুতাপ প্রকাশ করতে হবে কেবল আল্লাহতায়ালার কাছে। অন্য কারো কাছে নয়। কেননা বান্দার গুনাহ কেবল আল্লাহই ক্ষমা করতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা কি জানে না যে আল্লাহই একমাত্র তার বান্দাদের তাওবা কবুল করেন।’ -সুরা তওবা: ১০৪
হাদিসে সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমার যে দোয়া সাইয়্যেদুল ইস্তেগফারেও পাপ স্বীকারের কথা বলা হয়েছে। দোয়াটি হলো- ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানি ওয়াআনা আবদুকা ওয়াআনা আলা আহদিকা, ওয়া ওয়াদিকা মাসতাততু আউজুবিকা মিন শার্রি মা-ছা’নাতু আবয়ুলাকা বিনিয়ামাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবূয়ুলাকা বিজানবি ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুজ জুনুবা অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার রব। তুমি ছাড়া আর কোনো সত্য মাবুদ নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো, আমি তোমার বান্দা। আমি তোমার ওয়াদা ও অঙ্গীকারের ওপর সাধ্যানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত। আমি অনিষ্টকর যা কিছু করেছি তা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমার ওপর তোমার যে নিয়ামত আছে তার স্বীকৃতি দিচ্ছি। তোমার নিকট আমার গুনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও; কেননা তুমি ছাড়া আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না।’ -সহিহ বোখারি: ৬৩০৬
ইল্লা আনতা।’
প্রাজ্ঞ আলেমরা বলেন, কোনো পাপ বা অপরাধ যদি প্রকাশ না পায়, তবে নিজ থেকে আদালতে গিয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়া আবশ্যক নয়। যার দোষ আল্লাহ গোপন রেখেছেন সে যেন নিজের দোষ গোপন রাখে। আল্লাহর কাছে নিষ্ঠার সঙ্গে তওবা করাই তার জন্য যথেষ্ট। এ জন্য মায়িজ বিন মালিক আসলামি (রা.) যখন ব্যভিচারের স্বীকারোক্তি দিচ্ছিলেন তখন নবী কারিম (সা.) বারবার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন। তেমনিভাবে এক ব্যক্তি নবী কারিম (সা.)-এর সামনে এসে যখন জানাল, সে বাগানে এক নারীকে চুমু খেয়েছে, তখন হজরত ওমর ফারুক (রা.) বলেন, আল্লাহ এর দোষ গোপন করে রেখেছেন, যদি সে নিজের দোষ নিজে ঢেকে রাখত তাহলে কতই না ভালো হতো। তার কথা শুনে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) চুপ থাকেন।
পাপের স্বীকারোক্তি যেমন কোর্টে গিয়ে লিপিবদ্ধ করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে দেওয়ার দরকার নেই, তেমনি মসজিদের ইমামের কাছে বা বন্ধুদের কাছেও বলার দরকার নেই, এ জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। ইসলামে পাপ মার্জনার জন্য কোনো ব্যক্তির দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজন নেই; (প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে) যেমন খ্রিস্টধর্মের পাদ্রি ও হিন্দু ধর্মের ঋষি-মুনি ও ব্রাহ্মণদের দ্বারস্থ হতে হয়। আল্লাহ নিজেই বান্দার প্রতিটি আহ্বানে সাড়া দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন আপনাকে আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, (তখন বলবেন) আমি তাদের খুবই নিকটে রয়েছি, প্রার্থনাকারীর প্রার্থনায় সাড়া দিই যখন সে আমাকে ডাকে।’ -সুরা বাকারা: ১৮৬