প্রবাস
24 Bangladesh
২৫ জুন, ২০২৫ | 2:30 PM
‘আই লাভ ইউ মাম— আই লাভ ইউ’ দর্শক সারি থেকে চিৎকার ভেসে আসছিল। মঞ্চে তখন কালোগাউন, মাথায় গ্রাজুয়েশন ক্যাপ পরা হাস্যোচ্ছ্বল এক মা তার সদ্য পাওয়া ডিপ্লোমাটি হাতে ধরে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরসহ অন্যদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে। ছেলের চিৎকার তার কানে এলে ত্রিশোর্ধ্ব এই মা নিজেও চিৎকার করে বললেন, ‘আই লাভ ইউ টু’। এরপর গটগট করে এগিয়ে গেলেন অতিথিদের সঙ্গে করমর্দন করতে করতে। গৌরব, দৃঢ়তা আর মুগ্ধতার এক মিশেল আবেশ ধরে থাকল গোটা মঞ্চ জুড়ে কিছুক্ষণ। মাস্টার অব দ্য সেরিমনি (এমসি) মঞ্চে ডেকে নিলেন পরবর্তী গ্রাজুয়েটকে।
ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (ডব্লিইউএসটি)'র ক্লাস অব ২০২৫ এর কনভোকেশন ছিল এমন অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষণের এক অনুপম বৈকালিক আয়োজন। ২৬৩ জন শিক্ষার্থী তাদের ডিপ্লোমা সংগ্রহ করলেন আলেকজান্দ্রিয়া সিটি হাই স্কুলের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত কনভোকেশন থেকে।
তুমুল করতালি, ক্যামেরার ক্লিক, দর্শক সারি থেকে ক্ষণে ক্ষণে ছুঁড়ে দেওয়া দারুণ সব অভিনন্দন বার্তা মন ভরিয়ে রাখল সারাক্ষণ।
দিনটি ছিল ২১ জুন শনিবার। দুপুর ১২টার পর থেকেই মুখরিত হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল। কালো গাউন আর ক্যাপে ছেয়ে যেতে থাকে ক্যাম্পাস। নানা জাতি, নানা বর্ণ, নানা বয়স ও নানা ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষগুলো যেন সকলেই এক আর অভিন্ন।
তারা অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এখন পা রাখবেন কর্মজগতে। আবার অনেকেই ছিলেন, যারা এরইমধ্যে হয়তো রয়েছেন কাজে নিযুক্ত, তারই মাঝে শেষ করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি। এটি ছিল সকলেরই আনুষ্ঠানিক সনদ গ্রহণের দিন।
অনুষ্ঠান শুরু হলো ঘড়ির কাটায় বেলা ২টায়। তার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিরা নীল-কালোর মিশ্রণে কনভোকেশন গাউন পরে গলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডাল আর উত্তরীয় ঝুলিয়ে প্যারেড করে হলে ঢুকলেন। এরপর ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাকাডেমিক) ড. জেফের পিরিমের নেতৃত্বে আসন নিলেন মঞ্চের একদিকে। অন্যদিকে লাল-কালোর মিশেলে বিশেষ সেরিমোনিয়াল রোব পরে প্যারেড শেষে আসন নিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের নেতৃত্বে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরাসহ ঊর্ধ্বতনরা এবং বিশিষ্ট অতিথিরা। এর পরপরই স্কুল অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের গ্রাজুয়েটরা প্যারেড করে মঞ্চের বাম দিকের সারিতে বসলেন। একইভাবে প্যারেড শেষে ডান দিকের সারিতে আসন নিলেন স্কুল অব ইনফরমেশন টেকনোলজি'র গ্রাজুয়েটরা। পুরো আয়োজন সমন্বয়ের নেতৃত্ব ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট (অপারেশনস) ড. শ্যান চো।
অতিথিরা আগেই বসেছিলেন দর্শক সারির মাঝের আসনগুলোতে। সহস্রাধিক আসনবিশিষ্ট হলরুম তখন কানায় কানায় পূর্ণ। এরই মধ্যে এমসি'র ঘোষণা এলো জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। সকলে দাঁড়িয়ে ডান হাত বাম বুকে চেপে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি সম্মান দেখালেন ও কণ্ঠ মেলালেন।
এরপরর শুরু হলো গ্রাজুয়েশনের বক্তৃতা পর্ব। শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও বোর্ড চেয়ারম্যানের বক্তব্য। মঞ্চে এলেন ইঞ্জিনিয়ার আবু বকর হানিপ। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কোনো বাংলাদেশি আমেরিকান, যার হাতে পরিচালিত হচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।