বৃহস্পতিবার, ২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / July 17, 2025
Logo
আজকের শিরোনাম:

আন্তর্জাতিক

গুপ্তচর সন্দেহে বিপুলসংখ্যক আফগানকে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ইরান

Picture of the author

24 Bangladesh

৩ জুলাই, ২০২৫ | 11:51 AM

Picture of the author

ইসরায়েল ও ইরান গত মাসে যখন সংঘাতে জড়িয়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু করে, তখন রাজ্যের হতাশা নিয়ে আনমনে তাকিয়ে ছিলেন আফগান নাগরিক এনায়েতুল্লাহ আসগরি। আফগানিস্তানে অস্থিরতা দেখা দেওয়ার পর ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু ইরানের পরিস্থিতি এখন বৈরী হয়ে পড়েছে। তেহরানে ভবন নির্মাণকেন্দ্রগুলোতে কাজ কমে গেছে। আর আসগরির বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।

হাজার হাজার আফগান নাগরিকের মতো ৩৫ বছর বয়সী আসগরি সম্প্রতি ইরান ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, এ সংঘাত আফগানিস্তানকেও অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিতে পারে। দেশটি এমনিতেই মানবিক সংকটে জর্জরিত।

পরিবার নিয়ে দীর্ঘ যাত্রা শেষে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছার পর আসগরি বলেন, একটা ভাড়া বাসা খুঁজে পাওয়াই কঠিন, আর পেলেও ভাড়া খুব বেশি...কোনো কাজও নেই। তিনি আরও বলেন, তালেবান ২০২১ সালে ক্ষমতা নেওয়ার পর আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এ দেশে ফিরে তিনি কী করবেন, তা জানেন না।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, সংঘাত চলাকালে ইরান প্রতিদিন ৩০ হাজারের বেশি আফগানকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এটি সংঘাতের আগের সময়ের ১৫ গুণ বেশি।

ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি গত মঙ্গলবার বলেন, ‘আমরা সব সময় ভালো আতিথেয়তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি; কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। অবৈধভাবে থাকা বিদেশিদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।’

ফাতেমেহ আরও বলেন, এটাকে ‘বিতাড়ন’ না বলে ‘নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন’ হিসেবে দেখতে হবে। গুপ্তচরদের ধরতে সরকারের অভিযান সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি।

আফগান সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে তৎক্ষণাৎ কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাত শেষে সম্প্রতি একটি যুদ্ধবিরতি হয়েছে। এর আগে তারা একে অপরের ওপর হামলা চালায় এবং যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনার ওপর আক্রমণ করে।

জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে এ বছর বিদেশি, বিশেষ করে আফগানদের ধরপাকড় শুরু করেছে ইরান। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের সময় ধরপাকড় আরও তীব্র হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিতাড়িত আফগান ও মানবিক সংস্থার কর্মকর্তারা।

ইরানি কর্তৃপক্ষের অনুমান, আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর ২০২২ সালে প্রায় ২৬ লাখ আফগান ইরানে কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বসবাস করছিলেন।

আসগরি বলেন, ‘তারা (ইরান) আমাদের গুপ্তচর মনে করত এবং ঘৃণার চোখে দেখত। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পুলিশ এবং সরকার পর্যন্ত সবাই বলত—তোমরা আফগানরাই আমাদের শত্রু, তোমরাই আমাদের ভেতর থেকে ধ্বংস করেছ।’





    জনপ্রিয়

    সর্বশেষ