বৃহস্পতিবার, ২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / July 17, 2025
Logo
আজকের শিরোনাম:

সারাদেশ

ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪ স্থানে ভাঙন, প্লাবিত ৩০ গ্রাম

Picture of the author

24 Bangladesh

৯ জুলাই, ২০২৫ | 9:13 AM

Picture of the author

ফেনীতে ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কমপক্ষে ১৪ স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ৩০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়ে হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।


স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ১০টায় পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি রেকর্ড করা হয় ১৩.৯২ মিটার উচ্চতায় প্রবাহ হচ্ছে, যা বিপদসীমার চেয়ে ১.৩৭ মিটার বেশি। মঙ্গলবার সকাল ৭টায় যেখানে নদীর পানি ছিল ৭.০০ মিটার, সেখানে মাত্র ১৫ ঘণ্টায় তা বেড়ে যায় প্রায় ৬.৯২ মিটার।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীতে ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যা চলতি বর্ষা মৌসুমের সর্বোচ্চ।


ফুলগাজী ও পরশুরামের নদীর বাঁধে ভাঙনের ফলে একের পর এক গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙেছে জঙ্গলঘোনা, অলকা, শালধর ও উত্তর শ্রীপুর এলাকায়। কহুয়া নদীর বাঁধ ভেঙেছে সাতকুচিয়া, বেড়াবাড়িয়া ও দৌলতপুরে। এ ছাড়া সিলোনিয়া নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা গেছে গদানগর ও দেড়পড়া এলাকায়।

পরশুরামের চিথলিয়া এলাকার গৃহবধূ জাকিয়া আক্তার জানান, রাত ৮টার দিকে পানি ঘরে ঢুকে পড়ে। কোনোরকমে কিছু জিনিস নিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি।

মির্জানগরের রফিকুল ইসলাম বলেন, পাউবোর গাফিলতির কারণেই বল্লামুখা বাঁধের প্রবেশ মুখ বন্ধ করা হয়নি। প্রতি বছর কিছু লোকের দায়িত্বহীনতার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মোট ১৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ফুলগাজীতে ৩২টি মাধ্যমিক ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরশুরামে ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম জানান, উপজেলায় তিনটি নদীর বাঁধ ভেঙেছে চারটি স্থানে। আশ্রয়কেন্দ্রে ইতিমধ্যে শতাধিক মানুষ এসেছে। তাদের জন্য শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতির কারণে বুধবার থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করেছে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা প্রশাসন।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, অনেক সাব-স্টেশন ও বৈদ্যুতিক মিটার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। পানি আরও বাড়লে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার পরিধি বাড়তে পারে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, রাত ১২টার পর মুহুরী নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নতুন করে আরও এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে।


জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের সহায়তায় প্রাথমিকভাবে সাড়ে ছয় লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।





    জনপ্রিয়

    সর্বশেষ