ধর্ম
24 Bangladesh
১২ জুলাই, ২০২৫ | 6:09 AM
হাদিসে শেষ জামানা ও কিয়ামতের আগের মুহূর্ত নিয়ে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে। এই সময়ের অনেক কাজ ও আলামত সম্পর্কে রাসুল (সা.) উম্মতে মুহাম্মাদীকে সর্তক করেছেন। এমন একটি আলামত হলো অন্যায়ভাবে হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়া। এই সময়টিকে খুনাখুনি বা হত্যার যুগ বলা হয়েছে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন। দুনিয়া ধ্বংস হবে না যে পর্যন্ত না মানুষের কাছে এমন এক যুগ আসে, যখন হত্যাকারী জানবে না যে কী দোষে সে অন্যকে হত্যা করেছে এবং নিহত লোকও জানবে না যে কী দোষে তাকে হত্যা করা হচ্ছে। জিজ্ঞেস করা হলো, কীভাবে এমন অত্যাচার হবে? তিনি জবাবে বলেন, সে যুগটা হবে হত্যার যুগ। এরূপ যুগের হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই জাহান্নামি হবে।’ (মুসলিম: ৭১৯৬)
অন্য হাদিসে হজরত আবু মুসা আশআরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে বললেন—
কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ‘হারজ’ হবে। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! ‘হারজ’ কী? তিনি বলেন, ব্যাপক গণহত্যা।
কোনো কোনো মুসলমান বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা যে এই এক বছরে এত মুশরিককে হত্যা করলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তা মুশরিকদের হত্যা করা নয়, বরং তোমরা পরস্পরকে হত্যা করবে; এমনকি কোনো ব্যক্তি তার প্রতিবেশীকে, চাচাতো ভাইকে এবং নিকট আত্মীয়-স্বজনকে পর্যন্ত হত্যা করবে।
কেউ কেউ বলল, হে আল্লাহর রাসুল, তখন কি আমাদের বিবেক-বুদ্ধি লোপ পাবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অধিকাংশ লোকের জ্ঞান লোপ পাবে এবং অবশিষ্ট থাকবে নির্বোধ ও মুর্খরা।
এরপর আবু মুসা আল-আশআরী রা. বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি ধারণা করেছিলাম, হয়তো এ যুগ তোমাদেরকে ও আমাকে পেত, তাহলে তা থেকে আমার ও তোমাদের বের হয়ে আসা মুশকিল হয়ে যেত, যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, আমরা ওই অনাচারে যত সহজে জড়িয়ে পড়ব তা থেকে আমাদের নিস্তার ততোধিক দুষ্কর হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৯৫৯)
আরেক হাদিসে রাসুল সা. বলেছেন— ‘কিয়ামতের আগে ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, ভূমিকম্প বেশি হবে, সময় সংকীর্ণ হয়ে যাবে, ফিতনা প্রকাশ হবে, হত্যাকাণ্ড-খুনখারাবি বেড়ে যাবে, সম্পদের আধিক্য হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ১০৩৬)