এক্সক্লুসিভ
24 Bangladesh
২০ জুলাই, ২০২৫ | 9:56 AM
ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও ব্রহ্মপুত্র নদীর উৎস তিব্বতের ‘ইয়ারলুং স্যাংপো’ নদীর ওপর বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে চীন।
শনিবার তিব্বতে নদীটির ওপর নির্মিত বিশাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইয়ারলুং স্যাংপো’ নদীতে জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানায় চীন। এরপর গত বছরের ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের অনুমোদন দেয় বেইজিং।
নদীটি তিব্বতে ‘ইয়ারলুং স্যাংপো’ নামে পরিচিত এবং ভারত ও বাংলাদেশে এটি ‘ব্রহ্মপুত্র’ নামে পরিচিত। চীন এই প্রকল্পকে তাদের জিরো কার্বন লক্ষ্যমাত্রা এবং তিব্বত অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার তথ্যমতে, প্রকল্পটি মূলত দেশটির কার্বন নিরপেক্ষতা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অংশ এবং তিব্বতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কৌশলের অন্যতম উপাদান। প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ তিব্বতের পাশাপাশি চীনের অন্যান্য অঞ্চলেও সরবরাহ করা হবে।
সিনহুয়া জানায়, এই প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হবে এবং এতে আনুমানিক ব্যয় হবে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ১৬৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
বাঁধটি নির্মিত হলে এটি হবে বর্তমান বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ, যা ইয়াংসিকিয়াং নদীর থ্রি গর্জেস ড্যামকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, চীনের নতুন এই প্রকল্প নিয়ে ভাটির দেশগুলো যেমন- ভারত ও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা, প্রকল্পটির ফলে ভারত ও বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ যারা নদীর নিম্নপ্রবাহে বসবাস করেন, তাদের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।
ভারত জানুয়ারিতে জানায় যে, তারা তিব্বতের এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগের কথা চীনকে জানিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখন বলেছিল, চীনকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন ব্রহ্মপুত্র নদীর উজানে কোনও কার্যকলাপের মাধ্যমে নিম্নপ্রবাহের রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হয়।
চীনের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, প্রকল্পটি নদীর ভাটিতে কোনও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে।
তবে পরিবেশবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তিব্বতের মতো পরিবেশগতভাবে অতি সংবেদনশীল এলাকায় এত বড় অবকাঠামো প্রকল্প জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্যে অপূরণীয় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
সূত্রঃসিনহুয়, সাউথ চায়না মর্নিংপোস্, টাইমস অব ইন্ডিয়া ব্লুমবার্গ