রাজনীতি
24 Bangladesh
১২ আগস্ট, ২০২৫ | 3:01 PM
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অবশেষে বৃহত্তর জোট গঠনের চেষ্টায় দেশের বাম রাজনৈতিক দলগুলো। ঐক্যবদ্ধ এই প্রচেষ্টাকে চলতি মাসে একটি চূড়ান্ত পরিণতি পেতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, ঐক্যবদ্ধ এই প্রচেষ্টায় বাম গণতান্ত্রিক জোট, গণতন্ত্র মঞ্চসহ বিভিন্ন জোট ও দল এক মঞ্চে আসছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এ প্রক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা পালন করছে বলে জানা গেছে। খবর বলছে, সিপিবি অফিসে বাম গণতান্ত্রিক জোটের গতকালের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্রুতই বাম দলগুলো নিয়ে বৃহত্তর শক্তিশালী জোট গঠনের কথা রয়েছে।
বাম জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত নেতারা বলেছেন, দ্বিদলীয় রাজনীতির বাইরে একটি বামবলয় গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে দেশের বাম প্রগতিশীল দলগুলোর মধ্যে অনেক দিন ধরেই আলাপ-আলোচনা চলছে। আর বর্তমান বাস্তবতায় বিএনপি ও ধর্মভিত্তিক দলগুলোর বাইরে একটি বাম জোট গঠনের আকাঙ্ক্ষা থেকে আবারও নতুন করে কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু দলের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে।
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘আজ (সোমবার) সিপিবি অফিসে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বৈঠক হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা বাম প্রগতিশীল দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করব। আশা করছি খুব শিগগিরই বৃহত্তর জোট গঠন করতে সক্ষম হব।’
জানা গেছে, জোটে সিপিবি-বাসদের নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক জোটের দলগুলো থাকছে। থাকবে বাংলাদেশ জাসদও। আলোচনা চলছে গণফোরামের সঙ্গে। এ জোটে আরও আসতে পারে ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম জোটের দলগুলোও। এ ছাড়া বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, ঐক্য ন্যাপ, পাহাড়ি সংগঠন, দলিত ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের যেসব সংগঠন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে নেতৃস্থানীয় যাঁরা আছেন তাঁদেরও এ জোটে টানার প্রক্রিয়া চলছে। এরই মধ্যে কোনো কোনো দল ও জোটের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে একাধিক আলোচনা হয়েছে। অচিরেই আনুষ্ঠানিকভাবে ধারাবাহিক আলোচনা শুরু হবে বলে নেতারা জানান।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা বাম জোট গঠনের চেষ্টা করছি। সামনে নির্বাচনের জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা দলগত ও জোটগতভাবে নির্বাচনের চিন্তা করছি। বাম গণতান্ত্রিক জোট তো আছেই, সেই সঙ্গে আরও শক্তি নিয়ে বিকল্প জোট গড়ে তোলার চেষ্টা আমাদের।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জোট গঠনের উদ্দেশ্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষাতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পরিবেশের জন্য মাঠের আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং আগামী নির্বাচন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সমর্থন নিয়ে শ্রেণিবৈষম্য দূর করে একটি শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। আর এ লক্ষ্য সামনে রেখেই রাজপথের পাশাপাশি জাতীয় সংসদেও শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্য নিয়ে চলছে জোট গঠনের প্রক্রিয়া।
বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, ‘বৃহৎ একটি জোট গঠনের উদ্যোগ আছে। আমরা আলোচনা শুরু করেছি। সিপিবি, বাসদ, গণফোরামের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বাম, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, উদারনৈতিক দল নিয়ে এ ধরনের একটি জোট গঠনের চেষ্টা চলছে।’