বুধবার, ৮ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / July 23, 2025
Logo
আজকের শিরোনাম:

সারাদেশ

নরসিংদীর চরাঞ্চলে পাল্টাপাল্টি হামলায় গুলিতে নারী নিহত, আহত অনেকে

Picture of the author

24 Bangladesh

২১ জুলাই, ২০২৫ | 11:38 AM

Picture of the author

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ অনেকে আহত হয়েছেন। এ ছাড়া বাড়িঘরে গুলিবর্ষণ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।


আজ সোমবার ভোর পাঁটটা থেকে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়েদাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে মাঠে নেমেছেন সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা।


নিহত নারীর নাম মোমেনা বেগম (৪৫)। তিনি রায়পুরার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়েদাবাদ গ্রামের আকতার মিয়ার স্ত্রী। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত পাঁচজন হলেন নাজিমুদ্দিন (৪৫), সিয়াম মিয়া (১৬), মো. রানা (২০), মো. মাহিন (২০) ও তাজুল ইসলাম (২০)। অন্য আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার ঘোষ বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হানিফ মিয়া ও এরশাদ পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নারী নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়েদাবাদ বাজারের আধিপত্য বিস্তার ঘিরে বালুরচর ও সায়েদাবাদ গ্রামের লোকজনের বিরোধ অন্তত ৩০ বছরের। ওই বাজারের নিয়ন্ত্রণ সায়েদাবাদের হানিফ মিয়া পক্ষের লোকজনের হাতে। এদিকে বালুরচরের লোকজনও এরশাদ মিয়ার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়ে সায়েদাবাদ বাজারে নিয়মিত যাতায়াত করতে চান। কিন্তু হানিফের লোকজন কোনোভাবেই তা হতে দিতে চান না। এ নিয়েই দুই গ্রামের লোকজন কিছুদিন পরপরই আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটাসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সবালুরচর গ্রামের শত শত বিভিন্ন বয়সী মানুষ আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটাসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এরশাদ মিয়ার নেতৃত্বে সকাল আটটা পর্যন্ত সায়েদাবাদ বাজারে হামলা চালান।


এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নারী, শিশুসহ প্রতিপক্ষের অনেক মানুষ আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের দ্রুত উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেন। নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মোমেনা বেগম নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।


মোমেনার মৃত্যুর ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত হানিফ মিয়ার পক্ষের শত শত মানুষ আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটাসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বালুরচর গ্রামে গিয়ে পাল্টা হামলা চালান। এর আগেই গ্রামের লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরে যান। এ সময় তাঁদের বাড়িঘরে গুলিবর্ষণ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। তবে কয়টি বাড়িঘরে গুলিবর্ষণ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এরই মধ্যে সেনাবাহিনী ও রায়পুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।


নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফরিদা গুলশানারা কবির বলেন, ‘বুকে ও হাতে গুলিবিদ্ধ ওই নারীকে মৃত অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছিল। লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ পাঁচজনকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি।’


১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘রায়পুরার চরাঞ্চল সায়েদাবাদ থেকে আসা দুজন গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।’


এ ঘটনায় বক্তব্য জানতে দুই পক্ষের নেতা হানিফ মিয়া ও মো. এরশাদ মিয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। এর আগে গত বছরের ২২ আগস্ট সকালে বাজারের আধিপত্য নিয়ে দুই গ্রামের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৬ জন নিহত ও অন্তত ৫০ জন আহত হন। ওই ঘটনার তিন দিন পর রায়পুরা থানায় ১৫০ জনের নাম উল্লেখ করে দুটি হত্যা মামলা হয়। দুটি মামলায় প্রধান আসামি করা হয় হানিফ মিয়াকে।ংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।



    জনপ্রিয়

    সর্বশেষ