বৃহস্পতিবার, ২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / July 17, 2025
Logo
আজকের শিরোনাম:

স্বাস্থ্য

জুলাই আন্দোলনে নারীদের ত্যাগ-অবদান নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন

Picture of the author

24 Bangladesh

১৫ জুলাই, ২০২৫ | 9:04 AM

Picture of the author

জুলাই আন্দোলনে নারীরা যেই ত্যাগ এবং অবদান রেখেছেন -তা নিয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার। তিনি বলেন, জুলাই ২০২৪–এর গণঅভ্যুত্থানে নারীরা ঘরে বসে ছিল না, রাস্তায় নেমে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। এই বিপ্লবে নারীদের যে ত্যাগ-অবদান রয়েছে, তা নিয়ে এখন গবেষণা হওয়া উচিত।


সোমবার (১৪ জুলাই) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) ‘জুলাই উইমেনস ডে’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত র‌্যালি ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএমইউর শহীদ ডা. মিলন হলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম।

অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার বলেন, মা জাতিকে আমরা যেমন শ্রদ্ধা করি, অনেক ক্ষেত্রেই অবহেলাও করি। এই অবহেলার চর্চা বন্ধ করতে হবে। নারী কখনো পিছিয়ে ছিল না, জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে তারই প্রমাণ মিলেছে। এই অবদানের দলিল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে হবে। তাই প্রয়োজন গবেষণা, নথিভুক্তি।


তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এক অদম্য সাহসের নাম। এটি চিরকাল সব প্রজন্মকে প্রেরণা জোগাবে।



বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, জুলাই বিপ্লবে নারীরা শুধু পাশে ছিলেন না, নেতৃত্ব দিয়েছেন। শহীদ হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু আজও এই বিপ্লবের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণের বিচার হয়নি। আমরা এই বিচারের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, দেশটা সবার। তাই ফ্যাসিবাদ বা সন্ত্রাস যেখান থেকেই আসুক, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।


এ সময় জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক উইং সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবা চৌধুরী সুইট বলেন, জুলাই ছিল ইতিহাসের এক ‘ইউনিক রেভুলেশন’। তৃণমূল থেকে চিকিৎসক পর্যন্ত সবাই অংশ নিয়েছিল বলেই এটি সফল হয়েছে। দেশে বাক স্বাধীনতা ফিরেছে। ধর্মীয়ভাবে যা বলা হয়েছে—ক্ষমতার পালা ঘুরে যায়—এ আন্দোলনে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট মানসিকতা ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার মতো। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নৈতিকতা ও নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব দিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, জুলাই বিপ্লবে নারী ও শিশুদের অংশগ্রহণ ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনে তাদের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। এখন রণক্লান্ত হলে চলবে না। বিএমইউকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে জাতীয় নেতৃত্ব দিতে হবে।



তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলন কোনো দলীয় আন্দোলন নয়, এটি জাতির। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছে বলেই তা হয়ে উঠেছে এক সর্বজনীন চেতনার নাম। এই চেতনা ধরে রাখতে পারলেই শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব।

এর আগে সভায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার। এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন শহীদ মো. আরিফের বাবা বুলবুল কবির, শহীদ শ্রাবণ গাজীর মা শাহনাজ বেগম, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, অধ্যাপক ডা. জাহানারা লাইজু, ডা. ফারজানা ইসলাম রূপা, উপ-রেজিস্ট্রার সাবিনা ইয়াসমিন, ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা, সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত, প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা পাঠ করেন ডা. শাহ আজিজ। পরিবেশিত হয় দেশাত্মবোধক ও জাগরণমূলক সংগীত।



    জনপ্রিয়

    সর্বশেষ