Logo
বৃহস্পতিবার, ২৩ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / August 7, 2025
বৃহস্পতিবার, ২৩ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / August 7, 2025
আজকের শিরোনাম:

জাতীয়

হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও ‘ব্লক রেইড’ রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে

Picture of the author

24 Bangladesh

৩১ জুলাই, ২০২৫ | 5:13 AM

Picture of the author

হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও ‘ব্লক রেইড’ পরিচালনা করা হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে।এক্ষেত্রে সরাসরি নির্দেশ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের দেওয়া এক জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত ২৪ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক মামলায় তাঁর দেওয়া এ জবানবন্দির বিস্তারিত সম্প্রতি জানা গেছে।

২০২২ সাল থেকে শেখ হাসিনার সরকারের পতন পর্যন্ত আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর আগে র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি জবানবন্দিতে রাতের ভোট হিসেবে পরিচিত ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন, গুম, গোপন বন্দিশালা, জুলাই আন্দোলন দমনের বিভিন্ন কৌশল, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার ভূমিকার কথা উঠে আসে। সাবেক এই আইজিপি গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় তিনি ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হয়েছেন।


জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে একপর্যায়ে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আন্দোলনকে নজরদারি, গুলি করা ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে গোপন পরিকল্পনা করা হয়। আমি পরে জানতে পারি র‍্যাবের ডিজি (মহাপরিচালক) হারুন অর রশিদের পরিকল্পনায় ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় হেলিকপ্টার ব্যবহার এবং অপারেশন পরিচালনা করা হয়। তবে পুলিশপ্রধান হিসাবে আমি উক্ত কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। মূলত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়।’

প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহারের বিষয়ে জবানবন্দিতে বলা হয়, ‘আন্দোলন দমন করার উদ্দেশ্যে পরবর্তীতে সরাসরি প্রাণঘাতী অস্ত্র ও আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলোতে এলাকা ভাগ করে ব্লক রেইড পরিচালনার সিদ্ধান্ত সরাসরি রাজনৈতিকভাবে নেওয়া হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আমাকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আন্দোলন দমন করার জন্য প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় আমার সামনে অতিরিক্ত ডিআইজি (হেডকোয়ার্টার) প্রলয় জোয়ারদার উপস্থিত ছিলেন। তাঁর মাধ্যমে ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ওই নির্দেশনা জানতে পারেন।’

সাবেক আইজিপির জবানবন্দিতে উঠে এসেছে, ‘ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি যোগাযোগ ছিল। ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে অতি উৎসাহী ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাইতেন যেকোনোভাবেই হোক আন্দোলন দমন করতে হবে। ১৮ জুলাই (২০২৪) ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান প্রকাশ্যে চায়নিজ রাইফেল ব্যবহার করে গুলি করার নির্দেশ দেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা প্রসঙ্গে জবানবন্দিতে বলা হয়, সেখানে পুলিশ সঠিক ভূমিকা পালন করেনি। মূলত ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের নির্দেশে পুলিশ কাজ করে। ওবায়দুল কাদের ও নানক সাহেব ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে নির্দেশনা দিতেন। তাঁরাসহ কিছু নেতা ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেন।

সরকারকে বিপথে পরিচালিত করে ও আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমন করার জন্য আওয়ামী লীগপন্থী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, পুলিশ অফিসার সবাই আগ্রহী ছিলেন। ওবায়দুল কাদেরের আগ্রাসী বক্তব্যের ফলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ব্যাপকভাবে সক্রিয় হয়ে যায়।


    জনপ্রিয়

    সর্বশেষ