ধর্ম
24 Bangladesh
২৯ জুন, ২০২৫ | 8:07 AM
রাতের আগমন, দিনের পরিবর্তন মানুষের অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়। দুঃখ, কষ্ট, বিপদ ও সংকট মানুষের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলে।
শুধু তাই নয়, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে মানুষের শরীরে, তার পরিবারে, তার সম্পদে এমনকি তার দেশেও পরিলক্ষিত হয়এমতাবস্থায় মানুষের স্মরণ করা প্রয়োজন তার মহান রবের ঘোষণা।যে ঘোষণায় তিনি বলেছেন, ‘তিনি যদি তোমাকে বিপদ দিতে চান, তিনি ছাড়া এ বিপদ থেকে বাঁচানোর কেউ নেই। তিনি যদি তোমাকে কল্যাণ দিতে চান, এ কল্যাণ ঠেকানোর কেউ নেই। তিনি সব বিষয়ে ক্ষমতাশালী। ’
কোরআনে কারিমের অন্যত্র আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো, তোমাদেরকে জল ও স্থলের অন্ধকার থেকে কে রক্ষা করেন তোমরা তাকে ডাকো বিনয়ের সঙ্গে ও গোপনে। তোমরা বলো, তিনি যদি আমাদেরকে এর থেকে রক্ষা করেন তাহলে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবো। ’
একজন মুসলিম মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, আল্লাহতায়ালাই সব সংকট থেকে রক্ষাকারী। সব বিপদ ও কষ্ট দূরকারী। এ বিশ্বাস নিয়ে সে তার কাছে দোয়া করে নিষ্ঠা ও বিনয়ের সঙ্গে। কেননা আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো। ’
সুতরাং কষ্ট ও বিপদের সময় একদিকে যেমন দোয়া করতে হবে; অন্যদিকে আশা পোষণ করতে হবে, আল্লাহ সংকট থেকে প্রশস্ততার দিকে নিয়ে যাবেন, দুশ্চিন্তামুক্ত করবেন। দোয়াতে ওইসব বিষয়কে উসিলা তথা মাধ্যম বানানো যাবে যাকে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মাধ্যম বানিয়েছেন।
ইমাম তিরমিজি (রহ.) সাহাবি হজরত আনাস (রা.)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সংকটকালীন সময়ে বলতেন, ‘ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিছ। ’ অর্থাৎ ‘হে চিরঞ্জীব, হে নিজ থেকে প্রতিষ্ঠিত! আমি তোমার করুণা ও দয়ার মাধ্যমে সাহায্য চাই। ’
বিপদ ও সংকট থেকে রক্ষা পাওয়ার আরেকটি দোয়া হলো- হজরত ইউনূস (আ.) মাছের পেটে থেকে যে দোয়াটি করেছেন। তা হলো- ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন। ’ অর্থাৎ ‘তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তুমি পবিত্র। আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। ’
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম এটি পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে, আল্লাহ তাতে সাড়া দেবেন। ’ -মুসতাদরাকে হাকেম
এটি মূলত আল্লাহর ঘোষণা। তিনি বলেন, ‘আমি তার (ইউনূসের) ডাকে সাড়া দিয়ে, তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিয়েছি, অনুরূপ মুমিনদেরকে আমি মুক্তি দেবো। ’
সংকট থেকে মুক্তি, কঠিন অবস্থা দূর করা, কিয়ামত দিবসের বিভীষিকাময় অবস্থান থেকে পরিত্রাণ লাভের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো- আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ঈমান, তার সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা, তার অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে এমন সবকিছু বর্জন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহর যথাযথ অনুসরণ, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী সব কাজ সম্পাদন, তার বিপরীতে চলা থেকে সতর্ক থাকা।
বিপদ-সংকট থেকে বাঁচার আরেকটি উপায় হলো- আল্লাহর বান্দাদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের প্রতি অনুগ্রহ করা। এ ক্ষেত্রে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। ।