আন্তর্জাতিক
24 Bangladesh
১০ জুলাই, ২০২৫ | 11:34 AM
বেলজিয়ামে ইউরোপীয় মুসলিম আমব্রেলা সংগঠনগুলো ‘গাজা ঘোষণাপত্র’ পেশ করেছে। এক্সেকিউটিভ বডি অব মুসলিমস ইন বেলজিয়াম এর প্রেসিডেন্ট মেহমেত উস্তুনের সভাপতিত্বে ইংলিশ, জার্মান ও ফ্রেঞ্চ ভাষায় পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মুসলিম আমব্রেলা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই ঘোষণাপত্র পেশ করেন।
খবর অনুসারে, ইউরোপের ১৫ হাজারের বেশি মসজিদ ও ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী মুসলিম সংগঠনগুলো গাজায় চলমান মানবিক সংকট ও যুদ্ধাপরাধ বন্ধে একস্বর প্রতিবাদ জানিয়েছে। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা, আন্তর্জাতিক আইন রক্ষা এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ। ধ্বংস হয়ে গেছে সম্পূর্ণ পাড়া-মহল্লা, খাদ্য ও পানির জন্য সংগ্রামে প্রাণ হারাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। মানবিক সহায়তা ইচ্ছাকৃতভাবে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে, যা দুঃখজনকভাবে দুর্ভিক্ষের রূপ নিচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হতাহত বেসামরিক মানুষ হোক হামাস কিংবা অন্য কারও হাতে—নির্দোষ প্রাণহানি কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা যুদ্ধবিরতি, বন্দি মুক্তি, মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানায়।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গাজায় কেবল যুদ্ধ নয়, বরং সংগঠিতভাবে অবকাঠামো ও জীবিকা ধ্বংস করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও জাতিসংঘ এটি ‘গণহত্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করছে। এই মানবাধিকার লঙ্ঘন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
তারা জানায়, মানবিক সহায়তা এখন ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামক এক কাঠামোর মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে, যা সহায়তার প্রবাহ কমিয়ে এবং উত্তর গাজা থেকে মানুষ সরাতে চাপ সৃষ্টি করছে। এমন সহায়তা কাঠামো সংকটকে আরও গভীর করছে।
পশ্চিম তীরে দখল, ভূমি কেড়ে নেওয়া ও অবৈধ বসতি গড়ে তোলা—এসবই আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। অথচ এসবের বিপরীতে ইউরোপের বহু দেশের প্রতিক্রিয়া কেবল প্রতীকী, কার্যত কোনো কঠোর পদক্ষেপ দেখা যায় না। এই অবস্থায় প্রশ্ন ওঠে—মানবাধিকারের প্রতি যারা অঙ্গীকারবদ্ধ, তারা কীভাবে এমন চুপচাপ অবস্থান নিতে পারে?
ইসরায়েলের শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদদের গাজা স্থায়ীভাবে দখলের বা ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের বক্তব্য নিয়েও উদ্বেগ জানানো হয়। এর লক্ষ্য যেন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা ধ্বংস করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে তারা বেশ কিছু দাবির কথা উল্লেখ করে: অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং গণহত্যা বন্ধ, সব বন্দি ও আটক ব্যক্তির মুক্তি, মানবিক সহায়তার বাধাহীন প্রবেশ, আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনে ব্যবহৃত সম্ভাব্য অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত, গাজায় সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার এবং নিরাপত্তা, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও দুই রাষ্ট্রভিত্তিক টেকসই শান্তির ভিত্তি