বিনোদন
24 Bangladesh
২০ জুলাই, ২০২৫ | 8:25 AM
বরিশালে বসেই একের পর এক নাটক বানাচ্ছেন সুব্রত কুমার সঞ্জীব। প্রায় অর্ধশত নির্মাণের দ্বারপ্রান্তে এই পরিচালক। ‘রোদ বৃষ্টির গল্প’ নাটকের জন্য এবার মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কারে সেরা চিত্রনাট্যকারের স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। টানা এক সপ্তাহের শুটিং শেষে গত বৃহস্পতিবার এই পরিচালক শেষ করলেন নতুন নাটকের কাজ। এই নাটকে পরিচালকের সঙ্গে যাঁরা এবার কাজ করেছেন, অভিনয়শিল্পী থেকে চিত্রগ্রাহক, সবাই বরিশালের মানুষ।
নাম চূড়ান্ত না হওয়া নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মুশফিক আর ফারহান ও সাফা কবির—দুজনেরই পৈতৃক বাড়ি বরিশাল। সাফা জানালেন, তিনি শুধু একা নন, এই নাটকের সবাই বরিশালের। শিল্পী-পরিচালক-ক্যামেরাম্যান থেকে শুরু করে ইউনিটের কেউ না কেউ এই অঞ্চলের। এটা তাঁর জন্য অন্য রকম একটা ভালো লাগার।
পরিচালক জানালেন, বেশ বড় আয়োজনে কাজটা করা হয়েছে, দর্শক একটা সিনেমা দেখার ফিল পাবেন। লঞ্চঘাট, তালতলী, শায়েস্তাবাদ, দুর্গাসাগর, গুঠিয়া মসজিদের আশপাশের এলাকায় নাটকটির শুটিং হয়েছে।
সাফা কবিরের দাদাবাড়ি বরিশালের গৌরনদী, মায়ের বাড়ি বরিশাল সদর। পাঁচ বছর আগে প্রথমবারের মতো বরিশালে নাটকের শুটিং করেন সাফা। এরপর এবার। জানালেন, দাদা-দাদি ও নানা-নানির বংশের কেউ এখন আর বরিশালে থাকেন না। তাই অনেক কিছু মিস করছেন। সাফা বললেন, ‘আত্মীয়দের কেউ থাকলে অন্তত শুটিংয়ের ফাঁকে তাঁদের বাড়ি বেড়াতে যেতে পারতাম। ছোটবেলায় প্রায় প্রতি ঈদে বরিশাল যাওয়া হতো। বিয়ে কিংবা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে আব্বু-আম্মুর সঙ্গে যেতাম। তখন দাদা-দাদি, নানা-নানি ও আত্মীয়স্বজনে ভরপুর থাকত। ঢাকা থেকে বেড়াতে গেলে যে কয়টা দিন থাকতাম, কীভাবে যে পার হয়ে যেত, টেরই পেতাম না।’
ঢাকায় ফিরে বরিশালের শুটিং নিয়ে সাফা তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রতিবার বরিশালে গেলেই একটা গভীর, অজানা টান অনুভব করি। মনে হয়, আত্মার একটা অংশ এই জায়গার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। বরিশালে যে শান্তি আমি পাই, তা আর কোথাও পাই না। আবার নতুন করে প্রেমে পড়ে যাই। কাদামাখা রাস্তা, আঁকাবাঁকা নদী, বৃষ্টির পর মাটির গন্ধ আর অবশ্যই মুখরোচক খাবার। প্রতিদিন তাজা ডাব আর নারকেল আর সেই মিষ্টি, ঘন গুড়—একেবারে অসাধারণ। এইবার গিয়েছিলাম শুটিংয়ের কাজে, কিন্তু সেটা যেন রূপ নিল এক পূর্ণ, মনভরানো সফরে—লঞ্চে পা রাখার মুহূর্ত থেকে শুরু করে বিদায় নেওয়া পর্যন্ত। বরিশাল, তুমি আমার হৃদয় জয় করেছ।’
নাটকের পরিচালক সুব্রত বলেন, ‘বরিশালের বাইরে আমি কিছু কল্পনাই করতে পারি না। এই লোকেশন, ভিজ্যুয়াল আমার চেনা। এখানকার গল্প আমার জানা। আমার জগৎটা নিয়েই তো আমি কাজ করতে চাই। যে কারণে বরিশালের সংস্কৃতি, অসংগতি চোখে পড়লেই সেটা নিয়ে কাজ করতে চাই।’
এ পর্যন্ত ৪২টি নাটক নির্মাণ করেছেন সুব্রত। কোনোটার শুটিংই বরিশালের বাইরে করেননি। সুব্রত বলেন, ‘শিল্পীরা শুরু থেকেই আমাকে সহায়তা করেছেন। তাঁরা এখানে এসে মহড়ার জন্যও সময় বের করেন। একসময় অনেক কষ্টে লঞ্চে আসতে হতো। এখন শিল্পীরা গাড়ি নিয়েই চলে আসেন। আমিও চেষ্টা করি তাঁদের আরাম দেওয়ার। তাঁরা যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন।’