Logo
বৃহস্পতিবার, ১৬ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / July 31, 2025
বৃহস্পতিবার, ১৬ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ / July 31, 2025
আজকের শিরোনাম:

সারাদেশ

নারীকে গাছে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন

Picture of the author

24 Bangladesh

৩০ জুলাই, ২০২৫ | 7:26 AM

Picture of the author

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে গাছে বেঁধে এক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি আমগাছের গোড়ায় এক নারীকে হাতে ও কোমরে বেঁধে রাখা হয়েছে। 


ওই নারীর মাথার মাঝখানে চুল কাটা। পোশাক এলোমেলো। চোখে-মুখে নির্যাতনের ছাপ। অসহায় দৃষ্টিতে একদিকে তাকিয়ে আছেন তিনি।


এদিকে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় ও ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা হয়। ভুক্তভোগী নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ‌গত রোববার দুপুরে স্থানীয় প্রভাবশালী ইউনুস মিয়া ও তার লোকজন আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে তারা বেধড়ক মারধর করে। মাথার চুল কেটে দেয়। জুতার মালা পরিয়ে দেয়। পরে বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। সমাজে তাদের ব্যাপক প্রভাব। ফলে ওই প্রভাবশালীদের ভয়ে মুখ খুলছেন না স্থানীয় কেউ। এ ঘটনায় হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে একটি অভিযোগ দিয়েছি।


ওই নারী আরও বলেন, আমার শরীরে এখনো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নির্যাতন করে আমার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। ঘরের ভেতরে গরু বিক্রির টাকা সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। তারা আমাকে এখানে থাকতে দেবে না। তারা আমার বসতভিটার জমিটুকু নিতে চায়। পূর্বশত্রুতার জেরে আমাকে মারধর করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে তারা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। মামলা না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে বাড়ির বাইরে যেতে পারছি না। নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছি আমরা। তাদের আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।


সরেজমিন ও অভিযোগে জানা গেছে, গত রোববার ওই নারী পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামে বড় জায়ের বাপের বাড়িতে পোশাক তৈরি করতে যান। সেখান থেকে নিজের বাড়িতে ফেরার পর তাকে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে স্থানীয় ইউনুস মিয়া ও তার সহযোগীরা মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে উঠানের আমগাছের সঙ্গে পেছনে হাত ও পা দড়ি দিয়ে বাঁধা হয় তাকে। সেখানে প্রায় আড়াই ঘণ্টা নির্যাতন করে প্রভাবশালী নারী ও পুরুষেরা। কাঠ আর বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করা হয়। পরে মাথার চুল কেটে এবং মুখে রং মেখে দেওয়া হয়। তারপর জুতার মালা পরিয়ে দিয়ে তাকে বিবস্ত্র করে রাখা হয়। 


এরপর ওই নারী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ওই নারীর হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।


 এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান মজনু বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ইউনুস মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। এ সময় তার লোকজন উল্টো সাংবাদিকের ছবি ও ভিডিওচিত্র ধারণ করেন।

পলাশবাড়ী থানার আওতাধীন হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) সবুজার আলী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ওই নারীকে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে। থানায় মামলা করতে বলা হয়েছে।




    জনপ্রিয়

    সর্বশেষ