আন্তর্জাতিক
24 Bangladesh
২৭ জুন, ২০২৫ | 9:37 AM
চিরশত্রু ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধের পর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ইরান। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আকারে গ্রেপ্তার ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে তেহরান।
দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি ফার্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানি নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে ইসরায়েলি এজেন্টদের নজিরবিহীন অনুপ্রবেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তারা সন্দেহ করছে, সংঘাতের সময় ইসরায়েলের কাছে গোপন তথ্য পাঠানোর কারণে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছেন ইরানের বিপ্লবী গার্ডের শীর্ষ কমান্ডার ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে চালানো হত্যাকাণ্ড। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে কাজ করা দেশীয় গুপ্তচরদের দায়ী করছে ইরান।
তবে সাম্প্রতিক যুদ্ধের পর এখন তৎপরতা আরও বাড়িয়েছে ইরান। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন বিদেশি যেকোনো গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সন্দেহের তালিকায় রেখেছে।
তবে সমালোচকরা দাবি করছেন, এসব পদক্ষেপ বিরোধী কণ্ঠ দমন এবং জনগণের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করার একটি উপায় হতে পারে।
১২ দিনের সাম্প্রতিক এই যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরান। যুদ্ধবিরতির একদিন পর, আরও তিনজনকে একই অভিযোগে ফাঁসি দেওয়া হয়।
এরপর থেকে দেশজুড়ে শত শত মানুষকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তাদের স্বীকারোক্তির ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে তাদেরকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাকে সহযোগিতার কথা স্বীকার করতে শোনা গেছে।
ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ, মোসাদ ও ব্রিটিশ এমআই৬-এর বিরুদ্ধে ‘নিরলস যুদ্ধ’ চালাচ্ছে।
আইআরজিসির ঘনিষ্ঠ ফার্স নিউজ এজেন্সির বরাতে জানা গেছে, ১৩ জুন ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে ইরানে ‘ইসরায়েলি গুপ্তচর নেটওয়ার্ক ব্যাপকভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে’। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মাত্র ১২ দিনে দেশটির গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনী ৭০০ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সরকারি চাপের মুখে প্রবাসী সাংবাদিকদের পরিবারকেও টার্গেট করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। বিবিসি ফার্সির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হুমকি আরও তীব্র হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ‘মোহারেব’ বা ‘খোদার বিরুদ্ধে যুদ্ধকারী’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ইরানি আইনে এর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
এছাড়া ইরানে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণও তীব্র হয়েছে। যুদ্ধ চলাকালীন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বাধার মুখে পড়েছেন। যুদ্ধবিরতির পরও পুরোপুরি সচল হয়নি ইন্টারনেট। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টেলিগ্রাম, ইউটিউব এবং সংবাদমাধ্যম যেমন বিবিসি ফার্সি আগে থেকেই দেশটিতে নিষিদ্ধ।