স্বাস্থ্য
24 Bangladesh
১৩ আগস্ট, ২০২৫ | 2:14 PM
আরও এক হাজারের বেশি জনবল ছাঁটাই করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একমাত্র ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ইডিসিএলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামাদ মৃধা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এর আগে ৭২২ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এগুলো অদক্ষ জনবল।
সংবাদ সম্মেলনে সামাদ মৃধা বলেন, ইডিসিএলের উৎপাদনক্ষমতা অনুযায়ী দুই হাজারের বেশি অতিরিক্ত জনবল ছিল। তারা সবাই অদক্ষ কর্মী, অনেকের জাল সনদ পাওয়া গেছে। তারা কোনো কাজ করতো না। এই অদক্ষ জনবলের মধ্যে ৭২২ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থে আরও এক হাজারের বেশি জনবল ছাঁটাই করতে হবে। যাদের ছাঁটাই করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
সামাদ মৃধা বলেন, ‘বিগত সরকারের অনিচ্ছার কারণে ইডিসিএলকে কখনই যথাযথ ব্যবহার করতে পারেনি। আজকে আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছি এবং হওয়ার পর থেকে এ প্রতিষ্ঠানটির যে মূল উদ্দেশ্য, সেটিকে অতিপ্রয়োজনীয়তা তৈরিতে ফোকাস করছি। আগে বেশির ভাগ সাধারণ ওষুধ তৈরি করে আসছিল, বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং বিশেষ সহকারী স্যার বলেছেন যে, এই শিল্পের লাভ হচ্ছে মানুষের সুস্থতা।
তিনি বলেন, আগে ওষুধের কাঁচামাল ক্রয় প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ ছিল, আমরা সেগুলোকে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মানসম্মত ও ন্যায়সঙ্গত মূল্যে করছি। কোম্পানির অদক্ষ ও অপ্রয়োজনীয় জনবল কমিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি এবং এতে উৎপাদন খরচ কমে এসেছে এবং ইতিমধ্যে ৩৩টি ওষুধের দাম আগের তুলনায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হয়েছে। আশা করি, এই দিক নির্দেশনাগুলো অটুট থাকলে ৬ মাসের মধ্যে অধিকাংশ ওষুধ এর দাম কমিয়ে ফেলতে পারবো।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ৩৩টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম কমানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দাম কমানো হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এতে সরকারের ওষুধ ক্রয়ে ১১৬ কোটি টাকার মতো সাশ্রয় হবে। দাম কমানো ওষুধের মধ্যে রয়েছে ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ওরস্যালাইন, ইনজেকশনসহ ৯টি ধরন। এছাড়া বর্তমান সরকারের মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদনে গতি আনতে সিন্ডিকেট, দুর্নীতিসহ বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ভবিষ্যতে টিকা এবং বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্ট উৎপাদনে প্রতিষ্ঠানটির নতুন প্লান্ট স্থাপনের কথাও জানান সামাদ মৃধা। তিনি বলেন, আমাদের নতুন দুটি প্লান্ট হচ্ছে। এরমধ্যে একটি ভ্যাকসিন উৎপাদনমুখী বায়োটেক প্লান্ট। এই প্লান্টের আওতায় সনাতনি পদ্ধতির ওষুধ উৎপাদনের বাইরে গিয়ে ইনসুলিনসহ বায়োলজিক্যাল পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো হবে।
প্রতিষ্ঠানের খরচ কমানোর পাশাপাশি লাভজনক অবস্থা দাঁড় করাতে কাজ চলছে জানিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, অপচয় কমিয়ে, সিন্ডিকেট ভেঙে এবং অপ্রয়োজনীয় ৭০০ কর্মচারী ছাঁটাই করে উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৫৯ কোটি টাকার সমপরিমাণ। এছাড়াও কাঁচামাল কেনায় টেন্ডার প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করায় কম খরচে কাঁচামাল ক্রয় সম্ভব হয়েছে, যা প্রতি মাসে প্রায় ১৮ কোটি টাকা সাশ্রয়ের সুযোগ করে দিয়েছে।
সরকারি ওষুধ উৎপাদন আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা জানিয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, নিজেদের কারখানায় উৎপাদন বাড়িয়ে টোল ম্যানুফ্যাকচারিং বন্ধ করা হবে এবং সরকারি চাহিদার ৭০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশে উন্নীত করা হবে।’